গতকাল সোমবার বিকেলে পল অ্যালেনের বোন জোডি তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেন বলে বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। ওই বিবৃতিতে জোডি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অসাধারণ ব্যক্তি ছিলেন পল। তাঁর পরিবার এবং বন্ধুরা তাঁর বুদ্ধিমত্তা, উষ্ণতা, ভালোবাসা, উদারতা দেখার সুযোগ লাভ করেছিল।
হঠাৎ করেই চলে গেলেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেন। গতকাল সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

পল অ্যালেন নন-হজকিন্স লিম্ফোমা নামের একধরনের ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ২০০৯ সালে এই রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন অ্যালেন। এরপর আবার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে রোগটি ফিরে এসেছে বলে জানান তিনি। তাঁর চিকিৎসক অবশ্য চিকিৎসার ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ ছিলেন। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই মারা গেলেন তিনি।
পল অ্যালেনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘বহুদিনের প্রিয় এই বন্ধুর মৃত্যুতে ভীষণ আঘাত পেয়েছি আমি। সে না থাকলে ব্যক্তিগত কম্পিউটিং সম্ভব হতো না।’

বিল গেটস ও পল অ্যালেন—দুজনের হাতে বিশ্বের শীর্ষ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট করপোরেশনের গোড়াপত্তন হয়। ভাবনাটা প্রথম উদয় হয় অ্যালেনের মাথাতেই। পপুলার ইলেকট্রনিকস ম্যাগাজিনের জানুয়ারির, ১৯৭৫ সংখ্যার প্রচ্ছদে প্রথম মাইক্রোকম্পিউটার হিসেবে পরিচিত অ্যালটেয়ার ৮৮০০-এর ছবি ছাপা হয়। সেটা দেখার পর পল অ্যালেন তাঁর বাল্যবন্ধু বিল গেটসকে কম্পিউটারটির জন্য বেসিক প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরির ইচ্ছার কথা জানান।
অ্যালটেয়ার ৮৮০০-এর প্রস্তুতকারক মাইক্রো ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড টেলিমেট্রি সিস্টেমসের (এমআইটিএস) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটি নমুনা দেখানোর জন্য তাঁদের ডেকে পাঠায়। এরপর তাঁরা দুজনে মিলে তড়িঘড়ি করে কম্পিউটারটির জন্য একটি প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরি করেন। এমআইটিএস তাঁদের প্রোগ্রামিং ভাষা কিনতে সম্মত হলে ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন মাইক্রোসফট (বর্তমানে মাইক্রোসফট করপোরেশন)। এই মাইক্রোসফটই পরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার কোম্পানি হয়ে দাঁড়ায়।
মাইক্রোপ্রসেসর ও সফটওয়্যারের সংক্ষিপ্ত রূপ মাইক্রোসফট। এ নামটাও পল অ্যালেনের দেওয়া।
No comment yet, add your voice below!