Back

মুভি রিভিউঃ ব্যোমকেশ গোত্র

গল্পের মূলে ব্যোমকেশ। কিন্তু ‘হিরো’ সত্যকাম। তার জীবনে তিনজন নারী চরিত্র…। কেমন হল ‘ব্যোমকেশ গোত্র’?

ব্যোমকেশ গোত্র

‘রক্তের দাগ’, যেই গল্পের ভিত্তিতে এই ছবি বানানো, সেটা তোমরা সকলেই মনে হয় জানো। তাও একটু বলে নেওয়া যাক। ধনী ব্যবসায়ীর একমাত্র ছেলে সত্যকাম ব্যোমকেশের কাছে আসে এক অদ্ভুত প্রস্তাব নিয়ে। তার মৃত্যুর পর যেন ব্যোমকেশ সেই মৃত্যুর তদন্ত করে, এই ছিল তার দাবি। সেই মৃত্যুর সূত্রেই ব্যোমকেশ পৌঁছে যায় মুসৌরি। গল্প যত এগোয়, প্রকাশ পেতে থাকে সংসারে চাপা পড়ে থাকা নানা অপ্রিয় সত্য…

ব্যোমকেশ গোত্র
6/10

সারকথা

অভিনয়ে: আবির চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী, অঞ্জন দত্ত, প্রিয়ঙ্কা সরকার, সৌরসেনী মৈত্র, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়
পরিচালনা: অরিন্দম শীল

Pros

১৯৫২ সালের কলকাতায় যতটা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ছাপ ছিল সেটা এখন পাওয়া অসম্ভব। সম্ভবত সেই জন্যই পরিচালক বেছে নিয়েছেন মুসৌরিকে। ফলে দর্শকের উপরি পাওনা অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আর রূপকথার মতো শহরটাকে গল্পের সঙ্গে সুন্দরভাবে জুড়ে দিয়েছেন পরিচালক। এখানেই প্রশংসা প্রাপ্য তাঁর গল্প বলার ধরণের। শরদিন্দুর মূল গল্পটিকে এক রেখে যত কারিকুরি তিনি করেছেন তাতে রহস্য যে জমে গিয়েছে তা বলাই বাহুল্য! সবুজ পাহাড়ের গায়ে পাকানো রাস্তা বেয়ে ভিন্টেজ গাড়ির চেজ় সিকোয়েন্স— এই থ্রিল কলকাতার রাস্তায় অসম্ভব! আর যেটা ভাললাগে তা হল চরিত্র নির্মাণ। প্রত্যেকটি চরিত্রকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আর তার মান রেখেছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। আবির যে অন্যতম সফল ব্যোমকেশ, সে বিষয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই। এই ছবিতেও তিনি ততটাই ভাল। সোহিনী সত্যবতীর চরিত্রটিকে সম্পূর্ণ নিজের করে নিয়েছেন। নতুন অজিত হিসেবে রাহুলও যথেষ্ট ভাল। তবে তিনি চরিত্রটিকে যেন কিছুটা নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়েছেন। শরদিন্দুর অজিতের চেয়ে তিনি অনেক সরল। অঞ্জন দত্ত যথেষ্ট ভাল। নজর কেড়েছেন চুমকির চরিত্রে সৌরসেনী ও মীরার চরিত্রে নবাগতা বিবৃতিও। তবে এই ছবির প্রাপ্য অর্জুন। সত্যকামের চরিত্রটিকে তিনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তাতে তাঁর অভিনয়ের দক্ষতা নিয়ে আর কোনও সংশয় থাকতেই পারে না।

Cons

প্রিয়ঙ্কা যথেষ্ট শক্তিশালী অভিনেত্রী। এমিলির মতো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি যথাযথ। কিন্তু একটা খটকা রয়েই গেল। বারবার যেখানে বলা হচ্ছে যে চুমকি, তার দাদা ও এমিলি একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এসেছে, সেখানে তারা দু’জন সিলেটি টানে কথা বললেও এমিলির বাংলা এত স্পষ্ট কী করে? আরও একটা বিষয়ে এবার একটু নজর দেওয়া উচিত পরিচালকের। তা হল অ্যাকশন দৃশ্য। ব্যোমকেশের একটা ধুতি পরে অ্যাকশন দৃশ্য থাকলে ছবি জমে যায় ঠিক। কিন্তু সেই একই প্যাটার্নে এক-এক করে গুন্ডারা আসবে আর ব্যোমকেশের হাতে মার খেয়ে উড়ে যাবে, এর থেকে বেটার কিছু ভাবা কি যায় না? আর সত্যকাম কী ট্রেনিং নেওয়া গুন্ডা? না হলে একা, শুধুমাত্র একটা রুমালের সাহায্যে (হ্যাঁ, রুমাল!) পাঁচজনকে ধরাশায়ী করে দেওয়া কি মুখের কথা?

আবারও একটা অরিন্দম শীল-সুলভ ব্যোমকেশ। বরং এই ছবির গল্প কতটা শরদিন্দুর আর কতটা অরিন্দমের তাই নিয়ে মনে কিছুটা প্রশ্ন জাগতে পারে। কিন্তু গল্পের মূল কাঠামো তো এক। আর, ব্যোমকেশ তো ব্যোমকেশ-ই…। ফলে, এই ছবিটা ভাল লাগতে বাধ্য।

উৎসঃ উনিশকুড়ি

কিউরেটর
কিউরেটর
https://notunblog.com/
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিত্য সংবাদ ও খবর পৌঁছে দেওয়ার মহান দায়িত্বে অধিষ্ঠিত।