ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা মাথায় চাপলেই এক ধরনের উন্মাদনা কাজ করে। শ্বাস রুদ্ধকর ৯০ মিনিট এবং আমাদের দেশে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা হলেতো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায় উন্মাদনা। উন্মাদনার দিকে যাব না, জেনে নিব এই বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাস। জেনে নিব ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়সূচি।
ফিফা বিশ্বকাপ একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা যেখানে ফিফা সহযোগী দেশগুলোর পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল অংশ নেয়। ফিফা বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, ১৯৩০ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অবশ্য যদিও বিশ্বযুদ্ধের কারনে ১৯৪২ আর ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রাজিলে, ২০১৪ সালের ১২ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। এই বিশ্বকাপে জার্মানি আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে পরাজিত করে শিরোপা জিতে নিয়েছে। আরো গভীরে যাওয়ার আগে আমরা ২০১৮ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফিকশ্চার দেখে আসি।
২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের গ্রুপপর্বে কারা রয়েছে?
গ্রুপ এঃ রাশিয়া, সৌদি আরব, মিশর এবং উরুগুয়ে
গ্রুপ বিঃ পর্তুগাল, স্পেইন, মরক্কো এবং ইরান
গ্রুপ সিঃ ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, পেরু এবং ডেনমার্ক
গ্রুপ ডিঃ আর্জেন্টিনা, আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া এবং নাইজেরিয়া
গ্রুপ ইঃ ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকা এবং সার্বিয়া
গ্রুপ এফঃ জার্মানি, মেক্সিকো, সুইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়া
গ্রুপ জিঃ বেলজিয়াম, পানামা, তিউনিসিয়া এবং ইংল্যান্ড
গ্রুপ এইচঃ পোল্যান্ড, সেনেগাল, কলম্বিয়া এবং জাপান
আরো দেখুনঃ
২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়সূচীঃ
শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ড্রয়ের পর পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি প্রকাশ করেছে ফিফা। দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সূচিতে কার খেলা কখন।
গ্রুপ পর্বের খেলা৮ | |||
তারিখ | ম্যাচ | ঘটনাস্থল | কিক-অফ (বিএসটি) |
বৃহস্পতিবার ১৪ জুন | রাশিয়া – সৌদি আরব (এ) | মস্কো (লুজানিকি) | রাত ৯ টা |
শুক্রবার ১৫ জুন | মিশর – উরুগুয়ে (এ) | একটরঈনবর্গ | সন্ধ্যা ৬ টা |
শুক্রবার ১৫ জুন | মরোক্কো – ইরান (বি) | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ৯ টা |
শুক্রবার ১৫ জুন | পর্তুগাল – স্পেন (বি) | সোচি | রাত ১২ টা |
শনিবার ১৬ জুন | ফ্রান্স – অস্ট্রেলিয়া (সি) | কাজান | বিকাল ৪ টা |
শনিবার ১৬ জুন | আর্জেন্টিনা – আইসল্যান্ড (ডি) | মস্কো (স্পার্টাক) | সন্ধ্যা ৭ টা |
শনিবার ১৬ জুন | পেরু – ডেনমার্ক (সি) | Saransk | রাত ১০ টা |
শনিবার ১৬ জুন | ক্রোয়েশিয়া – নাইজেরিয়া (ডি) | কালিনিনগ্রাদ | রাত ১ টা |
রবিবার জুন ১৭ | কোস্টারিকা – সার্বিয়া (ই) | সামারা | সন্ধ্যা ৬ টা |
রবিবার জুন ১৭ | জার্মানি – মেক্সিকো (এফ) | মস্কো (লুজানিকি) | রাত ৯ টা |
রবিবার জুন ১৭ | ব্রাজিল – সুইজারল্যান্ড (ই) | Rostov-অন ডন | রাত ১২ টা |
সোমবার ১৭ জুন | সুইডেন – দক্ষিণ কোরিয়া (এফ) | Nizhny Novgorod | সন্ধ্যা ৬ টা |
সোমবার ১৮ জুন | বেলজিয়াম – পানামা (জি) | সোচি | রাত ৯ টা |
সোমবার ১৮ জুন | তিউনিসিয়া – ইংল্যান্ড (জি) | ভলগোগার্ড | রাত ১২ টা |
মঙ্গলবার ১৯ জুন | পোল্যান্ড – সেনেগাল (এইচ) | মস্কো (স্পার্টাক) | সন্ধ্যা ৬ টা |
মঙ্গলবার ১৯ জুন | কলোম্বিয়া – জাপান (এইচ) | Saransk | রাত ৯ টা |
মঙ্গলবার ১৯ জুন | রাশিয়া – মিসর (এ) | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ১২ টা |
বুধবার ২০ শে জুন | পর্তুগাল – মরোক্কো (বি) | মস্কো (লুজানিকি) | সন্ধ্যা ৬ টা |
বুধবার ২০ শে জুন | উরুগুয়ে – সৌদি আরব (এ) | Rostov-অন ডন | রাত ৯ টা |
বুধবার ২০ শে জুন | ইরান – স্পেন (বি) | কাজান | রাত ১২ টা |
বৃহস্পতিবার ২১ জুন | ফ্রান্স – পেরু (সি) | একটরঈনবর্গ | সন্ধ্যা ৬ টা |
বৃহস্পতিবার ২১ জুন | ডেনমার্ক – অস্ট্রেলিয়া (সি) | সামারা | রাত ৯ টা |
বৃহস্পতিবার ২১ জুন | আর্জেন্টিনা – ক্রোয়েশিয়া (ডি) | Nizhny Novgorod | রাত ১২ টা |
শুক্রবার ২২ জুন | ব্রাজিল – কোস্টা রিকা (ই) | সেন্ট পিটার্সবার্গে | সন্ধ্যা ৬ টা |
শুক্রবার ২২ জুন | নাইজেরিয়া – আইসল্যান্ড (ডি) | ভলগোগার্ড | রাত ৯ টা |
শুক্রবার ২২ জুন | সার্বিয়া – সুইজারল্যান্ড (ই) | কালিনিনগ্রাদ | রাত ১২ টা |
শনিবার ২৩ জুন | বেলজিয়াম – তিউনিসিয়া (জি) | মস্কো (স্পার্টাক) | সন্ধ্যা ৬ টা |
শনিবার ২৩ জুন | জার্মানি – সুইডেন (এফ) | সোচি | রাত ৯ টা |
শনিবার ২৩ জুন | দক্ষিণ কোরিয়া – মেক্সিকো (এফ) | Rostov-অন ডন | রাত ১২ টা |
রবিবার ২৪ জুন | ইংল্যান্ড – পানামা (জি) | Nizhny Novgorod | সন্ধ্যা ৬ টা |
রবিবার ২৪ জুন | জাপান – সেনেগাল (এইচ) | একটরঈনবর্গ | রাত ৯ টা |
রবিবার ২৪ জুন | পোল্যান্ড – কলম্বিয়া (এইচ) | কাজান | রাত ১২ টা |
সোমবার জুন ২৫ | উরুগুয়ে – রাশিয়া (এ) | সামারা | রাত ৮ টা |
সোমবার জুন ২৫ | সৌদি আরব – মিশর (এ) | ভলগোগার্ড | রাত ৮ টা |
সোমবার জুন ২৫ | স্পেন – মরোক্কো (বি) | কালিনিনগ্রাদ | রাত ১২ টা |
সোমবার জুন ২৫ | ইরান – পর্তুগাল (বি) | Saransk | রাত ১২ টা |
মঙ্গলবার ২৬ জুন | ডেনমার্ক – ফ্রান্স (সি) | মস্কো (লুজানিকি) | রাত ৮ টা |
মঙ্গলবার ২৬ জুন | অস্ট্রেলিয়া – পেরু (সি) | সোচি | রাত ৮টা |
মঙ্গলবার ২৬ জুন | নাইজেরিয়া – আর্জেন্টিনা (ডি) | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ১২ টা |
মঙ্গলবার ২৬ জুন | আইসল্যান্ড – ক্রোয়েশিয়া (ডি) | Rostov-অন ডন | রাত ১২ টা |
বুধবার ২৭ জুন | দক্ষিণ কোরিয়া – জার্মানি (এফ) | কাজান | রাত ৮ টা |
বুধবার ২৭ জুন | মেক্সিকো – সুইডেন (এফ) | একটরঈনবর্গ | রাত ৮ টা |
বুধবার ২৭ জুন | সার্বিয়া – ব্রাজিল (ই) | মস্কো (স্পার্টাক) | রাত ১২ টা |
বুধবার ২৭ জুন | সুইজারল্যান্ড – কোস্টা রিকা (ই) | Nizhny Novgorod | রাত ১২ টা |
বৃহস্পতিবার ২৮ জুন | জাপান – পোল্যান্ড (এইচ) | ভলগোগার্ড | রাত ৮ টা |
বৃহস্পতিবার ২৮ জুন | সেনেগাল – কলম্বিয়া (এইচ) | সামারা | রাত ৮ টা |
বৃহস্পতিবার ২৮ জুন | ইংল্যান্ড – বেলজিয়াম (জি) | কালিনিনগ্রাদ | রাত ১২ টা |
বৃহস্পতিবার ২৮ জুন | পানামা – তিউনিসিয়া (জি) | Saransk | রাত ১২ টা |
শেষ ১৬ | |||
শনিবার ৩০ জুন | ১ সি – ২ ডি (৫০ ম্যাচ) | কাজান | রাত ৮ টা |
শনিবার ৩০ জুন | ১ এ – ২ বি (ম্যাচ ৪৯) | সোচি | রাত ১২ টা |
রবিবার ১ জুলাই | ১ বি – ২ এ (ম্যাচ ৫১) | মস্কো | রাত ৮ টা |
রবিবার ১ জুলাই | ১ডি – ২ সি (ম্যাচ ৫৩) | Nizhny Novgorod | রাত ১২ টা |
সোমবার ২ জুলাই | ১ ই – ২ এফ (ম্যাচ ৫৩) | সামারা | রাত ৮ টা |
সোমবার ২ জুলাই | ১ জি – ২ এইচ (৫৪ ম্যাচে) | Rostov-অন ডন | রাত ১২ টা |
মঙ্গলবার ৩ জুলাই | ১ এফ – ২ ই (৫৫ ম্যাচ) | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ৮ টা |
মঙ্গলবার ৩ জুলাই | ১ এইচ – ২ জি (৫৬ ম্যাচ) | মস্কো (স্পার্টাক) | রাত ১২ টা |
কোয়ার্টার ফাইনাল | |||
শুক্রবার ৬ জুলাই | বিজয়ী ৪৯ – বিজয়ী ৫০ (৫৭) | Nizhny Novgorod | রাত ৮ টা |
শুক্রবার ৬ জুলাই | বিজয়ী ৫৩ – বিজয়ী ৫৪ (৫৮) | কাজান | রাত ১২ টা |
শনিবার ৭ জুলাই | বিজয়ী ৫৫ – বিজয়ী ৫৬ (৬০) | সামারা | রাত ৮ টা |
শনিবার ৭ জুলাই | বিজয়ী ৫১ – বিজয়ী ৫২ (৫৯) | সোচি | রাত ১২ টা |
সেমি-ফাইনাল | |||
মঙ্গলবার ১০ জুলাই | বিজয়ী ৫৭ – বিজয়ী ৫৮ | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ১২ টা |
বুধবার ১১ জুলাই | বিজয়ী ৫৯ – বিজয়ী ৬০ | মস্কো (লুজানিকি) | রাত ১২ টা |
তৃতীয় স্থান নির্ধারনি ম্যাচ | |||
শনিবার ১৪ জুলাই | দুটি সেমি-ফাইনালের পরাজয় | সেন্ট পিটার্সবার্গে | রাত ৮ টা |
ফাইনাল | |||
রবিবার ১৫ জুলাই | দুইটি সেমি-ফাইনালের বিজয়ী | মস্কো (লুজানিকি) | রাত ৯ টা |
এইতো গেলো সময়সূচী। তাহলে আগে যা বলছিলাম যে, ফিফার ইতিহাস ঘেটে দেখবো এই আর্টিকেলে।
প্রথম বিশ্বকাপ
১৯৩২ সালের লস এঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্ম অলিম্পিকে ফুটবলকে না রাখার পরিকল্পনা করা হয় কারণ যুক্তরাষ্ট্রে তখন ফুটবল (সকার) জনপ্রিয় ছিল না। ফুটবলের পরিবর্তে ওখানে আমেরিকান ফুটবল (রাগবি ফুটবল) জনপ্রিয় ছিল। ফিফা এবং আইওসি’র মাঝে অপেশাদার খেলার মর্যাদা নিয়ে মতবিরোধও দেখা দেয়। ফলে ফুটবল অলিম্পিক থেকে বাদ পড়ে যায়।
একারনে ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমে ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। নির্বাচিত বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুটবল সংস্থাকে এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। কিন্তু উরুগুয়েতে বিশ্বকাপ আয়োজনের অর্থ ছিল ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল সফরে আসতে হবে। এজন্য কোন ইউরোপীয় দেশ প্রতিযোগিতা শুরুর দুইমাস আগেও দল পাঠাতে সম্মত হয়নি।
রিমে শেষ পর্যন্ত বেলজিয়াম, ফ্রান্স, রোমানিয়া, ও যুগোস্লাভিয়া থেকে দল আনাতে সক্ষম হন। মোট ১৩টি দেশ এতে অংশ নেয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সাতটি, ইউরোপ থেকে দু’টি ও উত্তর আমেরিকা থেকে দু’টি।
প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচ একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় যাতে অংশ নেয় ফ্রান্স ও মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রও বেলজিয়াম। ফ্রান্স ৪-১ এবং যুক্তরাষ্ট্র ৩-০ ব্যবধানে এতে জয়ী হয়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম গোল করেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ত। ফাইনালে ৯৩,০০০ দর্শকের সামনে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব লাভ করে।
বিশ্বকাপের বিস্তৃতি
প্রথম দিকের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মূল সমস্যা ছিল আন্তমহাদেশীয় যাতায়াত ও যুদ্ধঘটিত সমস্যা। কয়েকটি দক্ষিণ আমেরিকান দল ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার জন্য ইউরোপে যেতে আগ্রহী থাকলেও কেবল ব্রাজিলই এই দুটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনে ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিতই হয়নি।
১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে প্রথম কোন ব্রিটিশ দল অংশ নেয়। এই ব্রিটিশ দলগুলো ১৯২০ সাল থেকে ফিফাকে বয়কট করে আসছিল। এর একটি কারণ ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের সাথে যেসব দেশের যুদ্ধ হয়েছিল তাদের সাথে না খেলার মানসিকতা এবং অন্য কারনটি ছিল ফুটবলে বিদেশী কর্তৃত্বের বিপক্ষে প্রতিবাদ। তবে তারা ১৯৪৬ সালে ফিফার আমন্ত্রণে সাড়া দেয়।
এই বিশ্বকাপে ১৯৩০ সালের বিশ্বকাপজয়ী উরুগুয়েকে আবার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে দেখা যায়, যারা পূর্ববর্তী দুটি বিশ্বকাপ বয়কট করেছিল। ১৯৫০ সালে উরুগুয়ে আবার বিশ্বকাপ জিতে নেয়।
১৯৩৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ১৬টি দল মূল পর্বে অংশ নিত। তবে ১৯৩৮ সালে জার্মানি অস্ট্রিয়াকে দখল করায় প্রতিযোগিতায় ১৫টি দল অংশ নেয়। ১৯৫০ সালে ভারত, স্কটল্যান্ড ও তুরস্ক নাম প্রত্যাহার করায় এই বিশ্বকাপে ১৩টি দল অংশগ্রহণ করে।অধিকাংশ দলই ছিল ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকাথেকে আগত, অল্প কিছু দল খেলেছে উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া ও ওশেনিয়া থেকে।
এসব দল খুব সজেই ইউরোপীয় ও দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলোর কাছে হেরে যেত। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা বাদে কেবল যে দলটি প্রথম পর্বের বাধা অতিক্রম করতে পেরেছে তারা হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৩০ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল; কিউবা, ১৯৩৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল; উত্তর কোরিয়া, ১৯৬৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল; এবং মেক্সিকো, ১৯৭০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল।
১৯৮২ বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২৪ করা হয়। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে দলের সংখ্যা ৩২-এ উন্নীত করা হয়। এতে করে আফ্রিকা, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা থেকে আরো বেশি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এক্ষেত্রে ওশেনিয়া মহাদেশ ব্যতিক্রম কেননা এখান থেকে কোন দল বিশ্বকাপে সুযোগ পায়নি।
সাম্পতিক বছরগুলোতে এসব এলাকার দলগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি সফলতা পেয়েছে। এসব এলাকার বিশ্বকাপের নক-আউট পর্যায়ে উত্তীর্ণ দলগুলো হলঃ মেক্সিকো, ১৯৮৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালে নকআউট পর্যায়; মরক্কো, ১৯৮৬ সালে নকআউট পর্যায়; ক্যামেরুন, ১৯৯০ সালের কোয়ার্টার-ফাইনালিস্ট; কোস্টারিকা, ১৯৯০ সালে নকআউট পর্যায়; নাইজেরিয়া, ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ সালে নকআউট পর্যায়; সৌদি আরব, ১৯৯৪ সালে নকআউট পর্যায়; যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৯৪ সালে নকআউট ও ২০০২ সালে কোয়ার্টার-ফাইনাল; দক্ষিণ কোরিয়া, ২০০২ সালে চতুর্থ স্থান; সেনেগাল, ২০০২ সালে কোয়ার্টার-ফাইনাল; জাপান, ২০০২ সালে নকআউট পর্যায়; এবং অস্ট্রেলিয়া ও ঘানা, উভয়ে ২০০৬ সালে নকআউট পর্যায়।
তবে, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলো এখনও অন্যান্য দলের ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। এর জ্বলন্ত উদাহরন হচ্ছে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালের আটটি দলই ছিল ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার।
২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য ১৯৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে এবং ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য রেকর্ড ২০৪টি দল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে।
আজ এই পর্যন্তই, চলতে থাকুক ফুটবল উন্মাদনা।
তথ্যসুত্রঃ
- উইকিপিডিয়া
- ফিফা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট