প্রতিদিন বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের কাছে মেসেজ পাঠাতে সবচেয়ে বেশি আমরা যা ব্যবহার করি সেটি আর কিছুই নয় কিন্তু ইমেইল। বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু তাই করে থাকে। তারা বারবার তাদের ইমেইল চেক করতে থাকে, অফিসের কাজে ইমেইল ব্যবহার করে এমনকি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলতেও ইমেইল ব্যবহার করে থাকে।
এই বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, যোগাযোগের যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে মাধ্যম ব্যবহার করা তা হল ইমেইল (ইলেক্ট্রনিক মেইল)। কি ভাবছেন, শুধুমাত্র চিঠির ব্যবহারই কমিয়েছে এটি? না, টেলিফোনের ব্যবহারও কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রেই কমে গেছে। আপনার চাকরির সিভি জমা দিতেও কিন্তু এখন ইমেইল ব্যবহার করা হয়।
তাহলে ইমেইল কি? এবং ইমেইল কিভাবে কাজ করে? ইমেইলের পেছনের দৃশ্য কিন্তু বিশাল, এক পর্দায় দেখানো বেশ কঠিন। সেই দৃশ্য কিন্তু আজকে আমরা দেখাচ্ছি না। তার বদলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ দুইটি বিষয়ের উপর আজ আলোক পাত করবঃ ১) ইমেইল কি? ২) কেন মানুষ বেশি বেশি ইমেইল ব্যবহার করে?
আরো দেখুনঃ
ইমেইল কি?
ইমেইল (পড়ুন ই-মেইল) হলো ডিজাটাল বার্তা। যেখানে কাগজ কলম ব্যবহার করার পরিবর্তে আপনি ব্যবহার করছেন কিবোর্ড এবং ফোন বা কম্পিউটার।
ইমেইল এড্রেস লেখার ক্ষেত্রে সবার প্রথমেই কাস্টম ইউজার নেইম লেখা হয় এবং @ এর পরে ডোমেইন নেইম লেখা হয়। যেমনঃ name@gmail.com
ইমেইল নিয়ে আরো কিছু মৌলিক তথ্য নিম্নরূপঃ
- ইমেইল পাঠানোঃ সঠিক ভাবে যখন আপনি ইমেইল লিখে ফেলবেন অর্থ্যাৎ, ইমেইল এবং ইমেইল এড্রেস ঠিক ভাবে প্রদান করবেন, তখন ইমেইল পাঠানো মানে হলো সেই ইমেইলটি তার নির্ধারিত এড্রেসে পৌঁছে যাবে।
- ইমেইলের মাধ্যমঃ প্রেরকের ইমেইল প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করে থাকে ইমেইল সার্ভার। মেসেজ পাঠানোর প্রোটকলটির নাম হল এসএমটিপি(SMTP), এবং ইমেইল ক্লায়েন্টের কাছে কিভাবে ইমেইলটি গ্রহিত হবে তা বুঝতে প্রয়োজন হয় পিওপি(POP) এবং আইমএপি(IMAP) সার্ভার।
- ইমেইল গ্রহনঃ নতুন মেসেজ পেলে,শুধুমাত্র প্রাপ্ত মেসেজটিতে ট্যাপ করলেই মেসেজটি স্ক্রিনে ফুটে উঠবে।
ইমেইল কেন ব্যবহার করা হয়? 😕😕
প্রতিদিন ইমেইল ব্যবহারের পিছনে যথেষ্ট কারন রয়েছেঃ
- দ্রুততাঃ ইমেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে সময়ের স্বল্পতাই কিন্তু ইমেইলকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। এখন সেকেন্ডেই কিন্তু বাসার পাশের মানুষ বা পৃথিবীর অপর প্রান্তের মানুষের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। 😉
- সুবিধাঃ কিছু ক্ষেত্রে ফোন কলের থেকেও ইমেইল বেশি কাজে দেয়। যেমনঃ একজন ব্যক্তিকে আপনি ফোন নাম্বার দিবেন, এক্ষেত্রে ফোন কলের মাধ্যমে দিতে হলে আগে নাম্বার কাগজে লিখে এরপর ফোনে বলতে হবে। কিন্তু আপনি একটা ইমেইলের মাধ্যমেই কাজটি সহজেই সেড়ে ফেলতে পারেন। 😉
- সংযুক্তিঃ ইমেইলে কোন সংযুক্তি পাঠানো খুবই সহজ এবং সিম্পল। চাকরির আবেদনে সিভি পাঠাতে হবে? ইমেইলেই সংযক্ত করে দিন! ব্যাস, খেলা শেষ 😉
- তথ্য ভান্ডারঃ ইমেইলে কিন্তু আপনার প্রতিটি কনভারসেশনের তথ্য সংরক্ষন করে। এ কারনে ইমেইল প্রিন্ট করা খুবই সহজ হয়। উপরন্তু, ইমেইল প্রোভাইডারদের বিশাল স্টোরেজে আপনি অনায়েসে তথ্য রেখে দিতে পারেন।
- অফুরন্ত জায়গা এবং সময়ঃ ফোনে এসএমস পাঠাতে কিন্তু একটা নির্দিষ্ট ক্যারেক্টারের মধ্যে দিতে হয়। ইমেইলে সেই বাধাধরা নেই, মানে যত ইচ্ছা লিখে যান, বলার কেউ নেই। যত সময় নিয়েই আপনি লিখুন এবং রিভাইজ করুন কোন সমস্যা নেই।
- ফ্রি ফ্রি ফ্রি! অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে চিঠি পাঠাতে আপনাকে ব্যয় করতে হতো কিন্তু এখন ফ্রি ইমেইল প্রোভাইডার এসে পড়ায় ইমেইল পাঠাতে কোনরূপ অর্থ দিতে হয়না বরঞ্চ আপনি আনলমিটেড স্টোরেজ পেয়ে যান।
- নিরাপত্তাঃ এমন কিছু ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার রয়েছে যারা আপনার পাঠানো মেসেজকে ৫/৬ লেয়ারের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে যাতে সেগুলো প্রেরক এবং প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ দেখতে না পারে।
ইমেইলের সীমাবদ্ধতা
ইমেইলের সবচেয়ে বড় যে সমস্যা রয়েছে তা হলো, অযাচিত বার্তা বা স্প্যাম মেইল।
এধরনের প্রচুর অযাচিত মেইলের ভিতরে আপনার কাংখিত ইমেইল খুঁজে পেতে এক ধরনের বেগ পেতে হয়। অবশ্য বর্তমানে অনেক প্রোভাইডার ফিল্টারিং এর মাধ্যমে স্প্যাম মেইলগুলোকে আলাদা করে রাখে কিন্তু তার পরেও এটি খুবই বিরক্তিকর। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে রিপোর্ট করলেই স্প্যাম থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে।
সঠিকভাবে রিপোর্ট করবেন কিভাবে?
- মেসেজেটি কোন এড্রেস থেকে এসেছে তা শনাক্ত করুন
- প্রেরকের আইএসপি(ISP) কে খুঁজে বের করুন
- ISP -র সাথে যোগাযোগ করতে সঠিক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করুন।