Back

সমাপ্তি

রাত দুপুরে শেষ হওয়া গল্পের
শুরুটা হয়েছিলো
ভরদুপুরের স্টেশনে।

গল্পের প্লট চিরচেনা সত্ত্বেও
নায়িকা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
চালচুলোহীন নায়কের
জীবনের বিবর্তনে।

পরীক্ষার আগের রাতের মত
অস্থিরতার চাপে শীর্ণপ্রায় নায়ক
স্ব-জ্ঞানে হয়ে যাওয়া কিছু ভুলের স্তুপ
জড়ো হয় নায়িকার বুক-সেলফ জুড়ে।
হতেই থাকে একের পর এক
মুমূর্ষু সম্পর্কের জীবন বিপন্ন
আশার প্রদীপের ক্ষীণ আলোয়
জীবন বাঁচে মর্ত্যলোকের বিবাগী সুরে।

অর্থ , প্রাচুর্য , বিত্ত- বৈভবের বাস্তবতাতে
সুর মিলায় নায়িকার আনমনা মন
হারিয়ে ফেলে আপাদমস্তক।
কান্নার জলকেলিকে উপেক্ষা করে
চুড়ান্ত হাসির বাস্তবতা
উপভোগের মন্ত্র তন্ত্র জপের
নতুন প্রজন্মের আয়োজক।

রাত বাড়ে, ঘুম ছেড়ে চলে ফিসফাস
রাতের পর রাত
প্রহরের পর প্রহর
হাসি ,ঠাট্টা , তামাশাতে কেটে যায়
জীবনবেলার মধুর কিছু সময়।

দুহাতে অভিশাপের ছাপ রেখে ভেঙ্গে যায়
চোখ জ্বালা করা মধ্যরাত
সাক্ষী হয়ে ঠাই দাড়িয়ে রয়
কখনো অশ্রু, কখনো কখনো নিউরণের অনুনয়।

বেঁচে থাকে মহাকাল
বেঁচে থাকে নতুন প্রজন্মের রক্ত
রক্ত হিম করা কিছু মিথ্যা
বেঁচে থাকে অবাক বিস্ময়ে।

হৃদপিন্ডের টুকটাক ভুল
হতে গিয়েও হয় না
চরম ব্যাথায় কুঁকড়ে গিয়েও
হারতে হারতে জিতে যায়
অসম্ভব প্রলয়ে।

কাদা ছোড়াছুড়ির পর্ব
জমেনি কখনো
হাতে যখন বিকল্পের ছড়াছড়ি
চিন্তা কিসের??
কিসের ভালোবাসা?
টাকার কাছে বিক্রীত প্রেমিকা!
ভালবাসাতো মোহ
ভালোবাসাতো আবেগ!!

যন্ত্রনার ভাগ বাটোয়ারা হয়
নিক্তির তুলাদন্ডে
বড় রকমের হেরফের চলে।
বেঁচে যায় উচ্চাভিলাষী নায়িকা
নরম কোমল মোটরযানের
বদৌলতে যে সুখ
তা সাইকেলের নিষ্ঠুর লোহাতে এসে
খেই হারিয়ে ব্যাথায় কুই কুই করে উঠে।

কথা ছিলো আজন্ম চোখে চোখ রেখে
সত্যি বলার
গোপন করার ছকে
সে সত্য দম বন্ধ হয়ে
চা পাতায় মোড়ানো কফিনে
আশ্রয় নেয়।

পরিশেষে ,
আবেগ, রাবির বৃষ্টিভেজা প্যারিস রোড
সিএন্ডবির অলস দুপুরের ইতিহাস
খুলেও দেখেনা বিজ্ঞানের ছাত্রীটা।
টি-বাধের হীরের মত জ্বলজ্বলে বিকেল,
প্রথম শাড়ীতে স্টুডিওতে ছবি তোলা,
ফুলতলার চটপটি,সাহেব বাজারের আধা ফুটন্ত গোলাপ,
চমকে দেয়া এক শীতের সকাল, কাঠ গোলাপের মুঠোভর্তি সুবাস
ঝিমিয়ে পড়ে পদার্থবিজ্ঞানের আইন্সটাইনের ঝাঁকড়া চুলে আর
সময়ের আপেক্ষিকতার তত্ত্বে।

পাঁচ টাকার ঝাল্মুড়ি, দুইটাকার লাভ ক্যান্ডি,
দশ টাকার ফুচকা, মুঠোভর্তি ক্যাটবেরির বেগুনি মোড়ক
অসুস্থ হয়ে পড়ে রসায়ন দ্বিতীয় পত্রের বিষক্রিয়াতে।

পায়ে পা রেখে কয়েক পা
হাঁটতে চাওয়ার প্রতিজ্ঞা,
কোমর জড়িয়ে উষ্ণতার স্ফুলিঙ্গ,
মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া
কিছু বেমানান অনুষঙ্গ,
হার মেনে যায়
বিন্দু হোটেলের বিরিয়ানির ঘ্রাণের বিষাক্ততার খুব গভিরে,খুব নীরবে।

কপালে চুমু খেয়ে, মাথায় হাত ছুঁয়ে করা প্রতিজ্ঞারা
দাত কেলিয়ে বিদ্রুপ করে হাঁসে
যখন প্রেমিকার হাত গিয়ে ছোঁয়
অচেনা কারো কাঁধে অথবা কোমরে।
আকাশের তারারাও মুখ ফিরিয়ে ঘুমোতে যায়
যখন প্রেমিকা অসুখের বা ঘুমের অজুহাতে
নতুন কারো সাথে গল্পে মাতে
রাতের পরে রাত।

বিশ্বাসের দুর্গে কামানের গোলার আঘাত লাগে
নিরেট ভালোবাসায় উইপোকা বাসা বাধে
কুরে কুরে খায় বর্তমান , অতীত, ভবিষ্যত।

চেয়ে চেয়ে দেখি
সময়ের চেয়ে বড় খেলোয়াড়
আর দ্বিতীয়টি নেই।

কোরবানী করে দেয়া ভালোবাসা
জীবন্ত হতে চেয়েও ঘুমিয়ে যায় রাত ন’টাতে
তাকে কড়া ডোজের সিডাটিভ পুশ করে ঘুম পাড়ানো হয়।

পরক্ষণেই জেগে যায় নতুন গল্প, নতুন ইতিহাস, নতুন প্রেম
প্রেমিকের মৃত্যু হয়
চৈত্রের ফুটন্ত দুপুর বেলায়
মেহেদি গাছের চিকন ডালে,
দাফন হয় চিরচেনা সমাধিতে
এফিটাফের বাক্যে লিখা হয়,
“এক জনমের ঋন
অর্থের মোহে শোধ হয়ে গেছে,
তুমি ঘুমাও প্রেমিক
ভালোবাসা, আবেগ
কান্না, হাসি সবটাই মিছে “।

shuvro
shuvro
বেঁচে থাকতে ভালোবাসি।